দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বিশেষভাবে সক্ষম নয়, বিশেষ জনপ্রিয়তা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন ‘প্রতিবন্ধী’ শব্দটা তাঁর ক্ষেত্রে বেমানান। সব অবহেলাকে ছাপিয়ে খ্যাতির শীর্ষে উঠে গিয়েছেন তিন পা ও দুই যৌনাঙ্গ বিশিষ্ট ব্যাক্তি ফ্রান্সিসকো লেনটিনি।
১৮৮৯ সালে ইতালির সিরোকুসা প্রদেশের রোসোলিনিতে তিনটি পা, দুটি যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্মেছিলেন ফ্রাঙ্ক। মাতৃগর্ভে ছিল যমজ ভ্রূণ। তবে জন্মের সময় দুই দেহ সম্পূর্ণ আলাদা হয়নি। ছিল তিনটি পা, তৃতীয় পায়ের হাঁটুর কাছ থেকে বেরিয়ে চতুর্থ পায়ের পাতা। একই সঙ্গে দুটি যৌনাঙ্গও ছিল শিশুটির! চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই ঘটনাকে বলা হয় ‘প্যারাসাইটিক টুইন’।
এই বিভৎস-দর্শণ সন্তানকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলেন ফ্রান্সিসকোর বাবা-মা। ফলে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য তৈরি একটি হোমেই কাটে ফ্রাঙ্ক লেনটিনির শৈশব। এই হোমেই হয় তার নামকরণ। এই হোম থেকেই দৌড়ানো থেকে শুরু করে সাইকেল চালানো সব কিছুই শিখেছিলেন ফ্রাঙ্ক।
ফ্রাঙ্কের বয়স যখন ৩০ বছর, তখন তিনি মার্কিন নাগরিকত্ব পান। ‘দ্য গ্রেট লেনটিনি’ নামে তিনি নিয়মিত একটি শো করতেন। এই শো-এ মানুষ তাঁর শরীরের অদ্ভুত গড়ন দেখতেই ভিড় করতেন। সেই সঙ্গে ফ্রাঙ্ক-এর আজব খেলাধুলো দেখতেন তাঁরা। শরীরের অদ্ভুর গড়নের কারণে বিভিন্ন নামী সার্কাস থেকেও ডাক পেতেন ফ্রাঙ্ক লেনটিনি। তার তিন পায়ের ফুটবল খেলা দেখে উচ্ছাস্বিত দর্শকের হাততালিতে ফেটে পড়ত সার্কাসের গ্যালারি। নিজের প্রতিবন্ধকতাকেই খ্যাতি, যশ পাওয়ার ‘টেক্কা’ হিসাবে কাজে লাগান তিনি। ১৯৩০ সালের মধ্যেই হয়ে ওঠেন মার্কিন মুলুকের অন্যতম ‘শো ম্যান’!
খ্যাতি, যশ পাওয়ার পর থেরেসা মুরে নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেন ফ্রাঙ্ক। চারটি সন্তান ছিল ফ্রাঙ্ক-থেরেসার। নিজের প্রতিবন্ধকতাকে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ করে হাজার হাজার দর্শককে অবাক করে অনেক প্রশংসা, অর্থ নাম কামিয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক। নিজের শারীরিক সমস্ত প্রতিবন্ধকতা বার বার পরাজিত করে জীবনটাকে আশ্চর্য ভাবে বদলে নিয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক লেনটিনি। ১৯৬৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতাত্তর বছর বয়সে মৃত্যু হয় ‘দ্য গ্রেট লেনটিনি’র।
Thank